Sign Up To The Free Email Newsletter!

Want to get notified whenever we produce the latest content ? Then subscribe now to start receiving hot updates from today.

Thursday, February 11, 2016

By : Unknown
On : 6:09 AM

 বিল্যান্সারের নেপথ্য কারিগরেরা l ছবি: প্রজন্ম ডটকম


বাংলাদেশের অর্থনীতি মূলত শ্রমনির্ভর। তবে তথ্যপ্রযুক্তির হাত ধরে পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে মেধানির্ভরতার দিকে। বাংলাদেশেও এই ধারা শুরু হয়েছে। জনপ্রিয় সব অনলাইন কাজের বাজারে (মার্কেটপ্লেস) বাংলাদেশের অবস্থান শীর্ষ দশের মধ্যে।
 বাংলাদেশি মুক্ত পেশাজীবীদের (ফ্রিল্যান্সার) কাজ যেখানে সারা বিশ্বে সমাদৃত, সেখানে আমাদের নিজস্ব অনলাইন কাজের বাজার নেই—মূলত এমন চিন্তা থেকেই ২০১৩ সালে ‘আমার ডেস্ক’ নামে যাত্রা শুরু করে ফ্রিল্যান্সারদের জন্য একটি দেশি অনলাইন মার্কেটপ্লেস। এখন এর নাম বিল্যান্সার (www.belancer.com)। এই ওয়েবসাইটে দেওয়া কাজগুলো বাংলাদেশের।
বিল্যান্সারের প্রতিষ্ঠাতা মো. শফিউল আলম বললেন, ‘তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য আমাদের নেই বললেই চলে। সবাই সেবা দিয়ে যাচ্ছে, যা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানকে বড় করছে। বিল্যান্সার চালু করার পেছনে এটাও বড় কারণ ছিল।’
ফ্রিল্যান্সিংয়ের এই সাইটের ব্যাপারে মানুষের আস্থা বাড়াতে শফিউল আলম কথা বলেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে। তিনি আমার ডেস্কের বদলে বিল্যান্সার নাম নিয়ে নতুন করে যাত্রা শুরুর কথা বলেন—জানালেন শফিউল।
বাংলাদেশে ১০ লাখের মতো মুক্ত পেশাজীবী অনলাইন কাজের বাজারগুলোতে কাজ করে যাচ্ছেন। কিছুদিন আগেও কাজের টাকা লেনদেনের সহজ কোনো পথ ছিল না। বিল্যান্সারের সুবিধাটা এখানেই। কাজ করার পর টাকা পাওয়ার ব্যাপারটা সহজ হয়ে যাবে। আন্তর্জাতিক অনলাইন কাজের বাজারগুলোর সব সুবিধাই আছে বিল্যান্সারে, কিছু কাজ অবশ্য এখনো চলছে।
বায়ার এখানে কাজ দেবেন (পোস্ট), ফ্রিল্যান্সাররা সে কাজের জন্য আবেদন বা বিড করবেন। আবেদনের তালিকা থেকে দক্ষতা, অভিজ্ঞতা এবং পোর্টফোলিও দেখে সেরা কর্মী বাছাই করবেন নিয়োগদাতা। কর্মীর প্রোফাইলে আগে করা কাজের তালিকা, তাতে নিয়োগদাতার দেওয়া পর্যালোচনা এবং আয়ের পরিমাণ উল্লেখ থাকে। ফলে সেরা কর্মী নির্বাচন করা সহজ হয়ে যায়।
নতুন কোনো কাজ পোস্ট করার সময় নিয়োগদাতার কাছ থেকে মোট কাজের সমপরিমাণ টাকা তাঁর বিল্যান্সার অ্যাকাউন্টে জমা করা হয়। কাজ বুঝে পেলে তিনি কর্মীকে তার কাজের জন্য সেখান থেকে টাকা পরিশোধ করে দিতে পারেন।
 এতে কর্মী ও নিয়োগদাতা, উভয়ই আর্থিক প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা পান। বিল্যান্সারে আয়ের উৎস দুই পক্ষই। কর্মী ও নিয়োগদাতা উভয়ের কাছ থেকে ৫ শতাংশ কেটে রাখা হয়।
মুক্ত প্ল্যাটফর্ম হওয়ায় বিল্যান্সারে জালিয়াতির আশঙ্কা তৈরি হতে পারে। তা প্রতিরোধে কী উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, তা-ই জানালেন শফিউল। বিল্যান্সার চালুর পর ওয়েবসাইটটি ছিল ত্রুটিপূর্ণ। আইসিটি বিভাগের সহায়তায় প্রায় ৩৫০ জন স্বেচ্ছাসেবক ৫৫০টির বেশি ত্রুটি-বিচ্যুতি চিহ্নিত করে জানায়। ত্রুটিগুলো দূর করে ওয়েবসাইটটির নতুন সংস্করণ চালু করার কথা আছে আজ ১ জুন।
ওয়েবসাইটটির নিরাপত্তা যেন বিশ্বমানের হয়, সেদিকেও রাখা হচ্ছে কড়া নজর বলে জানালে শফিউল। আর অনলাইন সেবাকেন্দ্র তো আছেই। লেনদেনের নিরাপত্তার ব্যাপারে শফিউল বলেন, ‘হাইপারট্যাগ নামে আমাদের প্রতিষ্ঠান আগে থেকেই মোবাইল লেনদেন নিয়ে কাজ করছে। সে অভিজ্ঞতা এখানে কাজে লাগাব।’
শফিউলের জন্ম ময়মনসিংহে, বেড়ে ওঠা সেখানেই। এসএসসির পাট চুকিয়েছেন ময়মনসিংহ জিলা স্কুল থেকে। এইচএসসি ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজে। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ থেকে স্নাতক শেষ করে পেশাজীবন শুরু করেন। সেসব দিনের কথা শফিউল নিজেই জানালেন, ‘বাংলায় মোবাইল গেম তৈরি করেছি অনেক আগে। বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের সঙ্গে মোবাইল রেমিট্যান্স নিয়ে কাজ করি। বাংলাদেশে ইলেকট্রনিক লেনদেন নিয়েও আমরা কাজ শুরু করেছি। আমরা আরেকটি উদ্যোগ নিয়েছিলাম সারা দেশের ডাকঘরগুলোকে আমূল বদলে দিতে, সেটা শেষ পর্যন্ত সফল হয়নি।’
বিল্যান্সার তৈরির পেছনে অনেকের মেধা-শ্রম আছে বলে জানালেন শফিউল। তাঁদের মধ্যে মোজাফফ্র চৌধুরী, শামসুল আরেফিন, শেকড় আহমেদ, আশিক আহমেদ, আজিজুর রহমান, রোহান রেজা, রহিম এম ইরতেজা, আনোয়ার হোসাইন, অনিন্দ্য আহমেদ, নাজমুস সাকিব, আসিব চৌধুরী, আশরাফুল আলম ও জিয়াউর রহমান উল্লেখযোগ্য। গত ১ মে নতুন পরীক্ষামূলক ওয়েবসাইট নিয়ে বিল্যান্সারের যাত্রা শুরু। এরই মধ্যে ১৫০টি কাজ পোস্ট হয়েছে। যেগুলোর আর্থিক মূল্যমান ৩০ লাখ টাকা। দিন দিন এই সাইটে বাড়ছে নতুন ফ্রিল্যান্সার ও কাজের সংখ্যা।
বিল্যান্সার যেভাবে ব্যবহার করবেন
প্রথমে www.belancer.com ওয়েবসাইটে গিয়ে নিবন্ধন করে নিতে হবে। নিবন্ধনের পর হবে আপনার নিজের অ্যাকাউন্ট। এরপর কাজ পোস্ট করা বা কাজের জন্য আবেদন করা যাবে এক অ্যাকাউন্ট দিয়েই। কাজে আবেদনের জন্য ‘ব্রাউজ ওয়ার্ক’-এ ক্লিক করতে হবে। এরপর ওয়েবসাইটটিতে সব কাজের তালিকা দেখাবে। আর নির্দিষ্ট কাজের জন্য দক্ষ ফ্রিল্যান্সার পাওয়া যাবে ‘ফাইন্ড ফ্রিল্যান্সার’ অংশে।
নতুন কাজ পোস্ট করতে লগ-ইন করে পোস্ট প্রোজেক্ট-এ ক্লিক করতে হবে। ফ্রিল্যান্সারের প্রোফাইলে আগে করা কাজের তালিকা, আগের নিয়োগদাতার দেওয়া পর্যালোচনা এবং পোর্টফোলিও দেখাবে, যা দেখে ফ্রিল্যান্সার সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে। কোনো সমস্যা সমাধানের জন্য যোগাযোগ করতে পারবেন ‘সাপোর্ট’ অংশে। সরাসরি যোগাযোগ (লাইভ চ্যাট) যেমন করা যাবে, তেমনই নিজের অভিযোগ জানিয়ে রাখার (টিকিট) সুযোগও আছে।

0 comments:

Post a Comment